পড়াশোনা

ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা বিষয়ক প্রশ্ন ও উত্তর

1 min read

প্রশ্ন-১. কত হিজরিতে মক্কা বিজয় হয়?
উত্তর : অষ্টম।

প্রশ্ন-২. উমর ইবনে আব্দুল আজিজ (র.) এর মাতার নাম কী?
উত্তর : উম্মু আসিম লায়লা।

প্রশ্ন-৩. কাকে পঞ্চম খলিফা বলা হয়?
উত্তর : হযরত উমর ইবনে আব্দুল আজিজ (রা.) কে ইসলামের পঞ্চম খলিফা বলা হয়।

প্রশ্ন-৪. হযরত মুসা (আ.) কত বছর বয়সে ইন্তিকাল করেন?
উত্তর : ১২০।

প্রশ্ন-৫। গোসলের ফরজ কয়টি ও কি কি?
উত্তরঃ গোসলের ফরজ তিনটি। এগুলো হলো–

  1. গড়গড়া করে কুলি করা।
  2. নাকের নরম জায়গা পর্যন্ত পানি পৌঁছানো।
  3. সমস্ত শরীর পানি দিয়ে ধোয়া।

প্রশ্ন-৬। সুমাইয়া শব্দের অর্থ কি?
উত্তরঃ সুমাইয়া শব্দের অর্থ খাঁটি বা নির্ভেজাল (Pure)। সুমাইয়া ইসলামের ইতিহাসের প্রথম শহীদ একজন মহিলা সাহাবীর নাম।

প্রশ্ন-৭। তাজবিদ কাকে বলে?
উত্তরঃ তাজবিদ আরবি শব্দ। এর অর্থ সুন্দর করা, বিন্যস্ত করা, সুন্দর করে সাজানো ইত্যাদি। ইসলামি পরিভাষায় আল-কুরআনকে শুদ্ধভাবে সুন্দর করে পড়াকে তাজবিদ বলে।

প্রশ্ন-৮। তাকওয়া কাকে বলে?
উত্তরঃ তাকওয়া শব্দের অর্থ বিরত থাকা, বেঁচে থাকা, ভয় করা নিজেকে রক্ষা করা। ব্যবহারিক অর্থে পরহেজগারি, খোদাভীতি, আত্মশুদ্ধি ইত্যাদি বোঝায়। ইসলামি পরিভাষায়, আল্লাহ তায়ালার ভয়ে যাবতীয় অন্যায়, অত্যাচার ও পাপকাজ থেকে বিরত থাকাকে তাকওয়া বলে।

ইকলাব কাকে বলে?
উত্তর : ইকলাব শব্দের অর্থ পরিবর্তন করে পড়া। তাজবিদের পরিভাষায় নুন সাকিন বা তানবিনের পর (ب) হরফ আসলে ঐ নুন সাকিন বা তানবিনকে মীম দ্বারা পরিবর্তন করে এক আলিফ পরিমাণ গুন্নাহসহ পড়াকে ইকলাব বলে।

প্রশ্ন-৯। ‘শাফাআত’ বলতে কী বোঝায়?
উত্তরঃ শাফাআত বলতে কল্যাণ ও ক্ষমার জন্য আল্লাহ তায়ালার কাছে নবি-রাসুল এবং পুণ্যবান বান্দাদের সুপারিশ করাকে বোঝায়।

শাফাআত অর্থ সুপারিশ করা, অনুরোধ করা প্রভৃতি। কিয়ামতের দিন মহান আল্লাহ তার বান্দাদের পাপ-পুণ্যের হিসাব নেবেন। এরপর আমল অনুসারে তাদেরকে জান্নাত ও জাহান্নামে পাঠাবেন। সেদিন নবি-রাসুল ও নেক বান্দাদের সুপারিশে আল্লাহ অনেক পাপীকে ক্ষমা করবেন। ইসলামি পরিভাষায় এ সুপারিশকে শাফাআত বলা হয়।

আসমানী কিতাব কাকে বলে?
উত্তর : মানবজাতিকে সঠিক পথ প্রদর্শনের জন্য মহান আল্লাহ যেসব কিতাব নাজিল করেছেন সেগুলোকে আসমানী কিতাব বলে। আসমানী কিতাব সর্বমোট ১০৪টি। তার মধ্যে ৪টি হলো প্রধান আসমানী কিতাব ও বাকি ১০০টি সহীফা।

আসমাউল হুসনা বলতে কী বোঝায়?
উত্তর : আসমাউল হুসনা হলো সুন্দর নামসমূহ।
আল্লাহ তায়ালার গুণবাচক নামসমূহকে একত্রে আসমাউল হুসনা বলা হয়। আল কুরআনে আল্লাহ তায়ালার এরূপ বহু গুণবাচক নাম উল্লেখ করা হয়েছে। হাদিস শরিফে আল্লাহ তায়ালার ৯৯টি গুণবাচক নামের কথা বলা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে আল্লাহ তায়ালার গুণবাচক নাম অসংখ্য। তারমধ্যে সবচেয়ে প্রসিদ্ধ হলো ৯৯টি নাম। যেমন- আলিম, রাযযাক, গাফফার ইত্যাদি।

নাযিরা তিলাওয়াত বলতে কী বোঝ?
উত্তর : নাযিরা তিলাওয়াত হলো কুরআন মাজিদ তিলাওয়াতের একটি পদ্ধতি।
আল-কুরআন দেখে দেখে তিলাওয়াত করাকে নাযিরা তিলাওয়াত বলা হয়। আমরা জানি, কুরআনের একটি হরফ দেখে দেখে উচ্চারণ করলে দশটি নেকি পাওয়া যায়। এ কারণে নাযিরা তিলাওয়াতও অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ। এছাড়া এ পদ্ধতিতে কুরআন পাঠ করলে পাঠে ভুল-ত্রুটির সম্ভাবনা কম থাকে।

হজ্জের ওয়াজিব কয়টি ও কি কি?
উত্তরঃ হজ্জের ওয়াজিব ৬ টি। নিচে তা দেওয়া হলো:

  • মীনায় অবস্থান করা
  • মুজদালিফায় রাত্রি যাপন করা
  • মিনায় শয়তানের উপর পাথর মারা ও মাথা মুন্ডন করা
  • কুরবানী করা
  • সায়ী বা দৌঁড়ানো
  • বিদায় তাওয়াফ করা

 

সৃষ্টির সেবা কাকে বলে?
উত্তরঃ আল্লাহর সকল সৃষ্টির প্রতি দয়া দেখানো ও সহানুভূতি প্রদর্শন করাকে সৃষ্টির সেবা বলে।
আল্লাহ তায়ালা এ পৃথিবীর সবকিছু সৃষ্টি করেছেন। আর সবকিছুর মধ্যে মানুষ সেরা। মানুষ আল্লাহর সব সৃষ্টির প্রতি দয়া দেখাবে। সহানুভূতি প্রকাশ করবে। এরই নাম সৃষ্টির সেবা। যারা আল্লাহর প্রতি দয়া দেখায় এবং সৃষ্টির সেবা করে আল্লাহ তাদের প্রতি খুশি হন। তাদের ভালোবাসেন ও তাদের ওপর রহমত বর্ষণ করেন।

সৃষ্টির সেবার চারটি উপকারিতাঃ
ক) সৃষ্টির সেবা করলে আল্লাহ খুশি হন।
খ) সৃষ্টির সেবাকারীদের আল্লাহ ভালোবাসেন।
গ) আল্লাহতায়ালা সেবাকারীর ওপর রহমান বর্ষণ করেন।
ঘ) সবাই তাদের শ্রদ্ধা করে।

‘সালাত হলো জান্নাতের চাবি’– বুঝিয়ে লেখো।
উত্তরঃ ইসলামের পাঁচটি মৌলিক স্তম্ভের মধ্যে দ্বিতীয়টি হলো সালাত।
সালাত সম্পর্কে মহানবি (স) বলেছেন, ‘সালাত হলো জান্নাতের চাবি’। সালাত বাদ দিয়ে যদি কেউ অন্য সব ইবাদত করে তাহলেও সে ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না। কারণ জান্নাত তালা মারা থাকবে, আর সে তালার চাবি হলো সালাত। সেজন্য রাসুল (স) বলেছেন, “সালাত হচ্ছে জান্নাতের চাবি।

সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ বলতে কী বোঝায়? ব্যাখ্যা করো।
উত্তরঃ যেসব কাজ মহানবি হযরত মুহাম্মদ (স) নিজে সর্বদা পালন করতেন এবং অন্যদেরকেও তা পালনের তাগিদ দিতেন, তাকে সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ বলে।
সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ ওয়াজিবের কাছাকাছি। এগুলো পালন করা কর্তব্য। ইচ্ছাকৃত বা অবহেলাবশত এগুলো পালন না করলে গুনাহ হয়। এ ধরনের বিধানের মধ্যে রয়েছে- আযান ও ইকামত দেওয়া, ফজরের ফরজ নামাযের পূর্বে দুই রাকাআত জোহরের ফরজের পূর্বে চার রাকআত ও পরে দুই রাকাআত, মাগরিক ও এশার ফরজের পর দুই রাকাআত নামায আদায় করা।

তকদিরে বিশ্বাস বলতে কী বোঝায়?
উত্তরঃ তকদির অর্থ হলো নির্ধারিত পরিমাণ, ভাগ্য বা নিয়তি। আল্লাহ তায়ালা মানুষের তকদিরের নিয়ন্ত্রক। তিনিই তকদিরের ভালোমন্দ নির্ধারণকারী। মানুষ যা চায় তা-ই সে করতে পারবে না। বরং মানুষ শুধু তার কাজের জন্য চেষ্টা সাধনা করবে। অতঃপর ফলাফলের জন্য আল্লাহ তায়ালার উপর ভরসা করবে। যদি চেষ্টা করার পরও কোনো কিছু না পায় তবে হতাশ হবে না। আর যদি পেয়ে যায় তবুও খুশিতে আত্মহারা হবে না। বরং সবর (ধৈর্য ধারণ করবে ও শোকর (কৃতজ্ঞতা) আদায় করবে। আর তকদিরের ভালোমন্দ একমাত্র আল্লাহ্ তায়ালার হাতে, মনে প্রাণে এরূপ বিশ্বাস স্থাপন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

‘ইমান আল্লাহর একটি বড় নিয়ামত’- ব্যাখ্যা করো।
উত্তরঃ ইমান ছাড়া দুনিয়া এবং আখিরাতে কল্যাণ লাভ করা অসম্ভব। তাই আলোচ্য কথাটি বলা হয়েছে।
ইমানদার ব্যক্তি যাবতীয় অন্যান্য কাজ পরিত্যাগ করে ন্যায়ের পথে চলে। আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের নির্দেশ মেনে চলে। তাই দুনিয়া ও আখিরাতে তিনি শ্রদ্ধা, সম্মান, কল্যাণ ও সাফল্য লাভ করেন। আল্লাহ বলেছেন, “নিশ্চয়ই যারা ইমান আনে ও সৎকর্ম করে তাদের আপ্যায়নের জন্য রয়েছে ফিরদাউস জান্নাত। (সূরা আল-কাহাফ : ১০৭)। এ কারণে ইমান আল্লাহর একটি বড় নিয়ামত।

বদরের যুদ্ধ সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত বর্ণনা কর।
উত্তরঃ বদরের যুদ্ধ ১৩ মার্চ ৬২৪ খ্রিস্টাব্দে (২ হিজরি ১৭ রমজান) মদিনার মুসলিম ও মক্কার কুরাইশদের মধ্যে সংঘটিত হয়। ইসলামের ইতিহাসে এটি প্রথম প্রধান যুদ্ধ। এই যুদ্ধ সংঘটিত হয় মদিনার দক্ষিণে বদর প্রান্তরে। এই যুদ্ধে জয়ের ফলে মুসলিমদের ক্ষমতা পূর্বের তুলনায় বৃদ্ধি পায়।

জাহান্নামের শাস্তি কেমন হবে?
উত্তরঃ মহান আল্লাহ জাহান্নামে বিভিন্ন ধরনের ভয়ংকর শাস্তির ব্যবস্থা করে রেখেছেন।
জাহান্নামে পাপীরা আগুনে দগ্ধ হবে। বড় বড় সাপ, বিচ্ছু, কীটপতঙ্গ তাদেরকে দংশন করবে। জাহান্নামের আগুন হবে আমাদের দুনিয়ার আগুন থেকে সত্তর গুণ বেশি উত্তপ্ত। জাহান্নামিদের খাদ্য হবে ‘যাক্কুম’ নামক বড় বড় কাঁটাযুক্ত বৃক্ষ। জাহান্নামের পানীয় হবে দোযখিদের উত্তপ্ত রক্ত ও পুঁজ। জাহান্নামের শাস্তির ধরন খুবই ভয়াবহ ও যন্ত্রণাদায়ক।

আল্লাহ পাক মুমিনদের জন্য জান্নাতের ব্যবস্থা রেখেছেন কেন? ব্যাখ্যা করো।
উত্তরঃ মহান আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের আদেশ-নিষেধ মেলে চলার পুরস্কারস্বরূপ মুমিনদের জন্য আল্লাহ পাক জান্নাতের ব্যবস্থা রেখেছেন।
ইমান মহান আল্লাহর একটি বড় নিয়ামত। এর ফলে মুমিনগণ আল্লাহর ও রাসুল (স.) এর নির্দেশ বাস্তবায়নে তৎপর হয়। তারা সকল অন্যায় কাজ পরিহার করে। ভালো গুণের চর্চার মাধ্যমে নিজেদেরকে উত্তম মানুষ হিসেবে আল্লাহর দরবারে পেশ করে। এতে তারা আল্লাহর প্রিয়পাত্রে পরিণত হয়। আর আল্লাহ এজন্যই তাদের প্রতিদানস্বরূপ জান্নাত প্রস্তুত করে রেখেছেন।

Rate this post
Mithu Khan

I am a blogger and educator with a passion for sharing knowledge and insights with others. I am currently studying for my honors degree in mathematics at Govt. Edward College, Pabna.

Leave a Comment

x