অষ্টম শ্রেণির বিজ্ঞান ষষ্ঠ অধ্যায় প্রশ্ন ও উত্তর

পরমাণু কি?

উত্তরঃ পরমাণু হচ্ছে মৌলিক পদার্থের ক্ষুদ্রতম অংশ, যার মধ্যে ঐ মৌলের বৈশিষ্ট্য বজায় থাকে, যা স্বাধীনভাবে অবস্থান করতে পারে না কিন্তু রাসায়নিক বিক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করতে পারে।

পরমাণুর কেন্দ্রে কী থাকে?
উত্তরঃ
 পরমাণুর কেন্দ্রে প্রােটন ও নিউট্রন থাকে।

কী কী কারণে পরমাণু হতে ইলেকট্রন বিচ্যুতি ঘটে?

উত্তরঃ নিম্নলিখিত কারণে পরমাণু হতে ইলেকট্রন বিচ্যুতি ঘটতে পারে।
১. পদার্থকে তাপ প্রয়োগ করলে।
২. রাসায়নিক বিক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করলে পরমাণু হতে ইলেকট্রন বিচ্যুতি ঘটে।
৩. তড়িৎ চালক বল প্রয়োগ করলে।
৪. আলোক শক্তির সাহায্যে।

পারমাণবিক ভরের একক নেই কেন?

উত্তরঃ পারমাণবিক ভর হচ্ছে একটি অনুপাত সংখ্যা। যার কারণে এর কোন একক নেই।

আধুনিক সংজ্ঞা অনুসারে, পারমাণবিক ভর হচ্ছে কোন মৌলের একটি পরমাণুর ভর এবং কার্বন-12 আইসোটোপের একটি পরমাণুর ভরের 1/12 অংশের অনুপাত।

সুতরাং, পারমাণবিক ভর অনুপাত সংখ্যা হাওয়াই এর কোন একক নেই।

পরমাণুর প্রতি কক্ষপথে ইলেকট্রন বিন্যাসের সূত্র কি?

উত্তরঃ পরমাণুর প্রতি কক্ষপথে ইলেকট্রন বিন্যাসের সূত্র হলো, E = 2n2। এখানে n দ্বারা কক্ষপথের সংখ্যা নির্ধারণ করা হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ :
১ম কক্ষপথের জন্য, যদি n = 1 হয়, তবে E = 2n2 = 2×(1)2 = 2টি
২য় কক্ষপথের জন্য, যদি n = 2 হয়, তবে E = 2n2 = 2×(2)2 = 4টি
৩য় কক্ষপথের জন্য, যদি n = 3 হয়, তবে E = 2n2 = 2×(3)2 = 18টি

পরমাণু ভেঙে কী কী কণা পাওয়া যায়? এরা পরমাণুর কোথায় অবস্থান করে?

উত্তরঃ পরমাণু ভেঙে তিনটি স্থায়ী মৌলিক কণিকা পাওয়া যায়। যথা– ১. ইলেকট্রন, ২. প্রোটন ও ৩. নিউট্রন।

পরমাণুর কেন্দ্রে থাকে প্রোটন এবং নিউট্রন। আর কেন্দ্রের চারিদিকে বৃত্তাকার কক্ষপথে ইলেকট্রন ঘুরতে থাকে।

নাইট্রোজেনের পারমাণবিক সংখ্যা ৭ বলতে কী বোঝায়?

উত্তরঃ কোনো মৌলের একটি পরমাণুতে প্রোটনের সংখ্যাকে ঐ মৌলের পারমাণবিক সংখ্যা বলে। নাইট্রোজেনের পারমাণবিক সংখ্যা ৭ বলতে বোঝায় নাইট্রোজেনের পরমাণুতে প্রোটন সংখ্যা ৭। যেহেতু নাইট্রোজেন পরমাণু চার্জ নিরপেক্ষ ফলে নাইট্রোজেন পরমাণুতে প্রোটন ও ইলেকট্রনের সংখ্যা সমান। তাই এর ইলেকট্রন সংখ্যা হবে ৭।

ইলেকট্রন, প্রোটন ও নিউট্রনের বৈশিষ্ট্য লিখ।

উত্তরঃ ইলেকট্রন, প্রোটন ও নিউট্রনের বৈশিষ্ট্যগুলো নিচে বর্ণনা করা হলো।
ইলেকট্রন : ইলেকট্রন ঋণাত্মক চার্জবিশিষ্ট কণিকা। এটি কক্ষপথে নিউক্লিয়াসের চতুর্দিকে ঘোরে। এর ভর 9.1 × 10-31 kg, বিদ্যুৎমাত্রা -4.8029 × 10-10 esu এবং ব্যাসার্ধ 1.4 × 10-15 মিটার (প্রায়)।
প্রোটন : প্রোটন হচ্ছে পজিটিভ চার্জবিশিষ্ট কণা। এর ভর 1.673 × 10-27 kg, বিদ্যুৎমাত্রা +4.8029 × 10-10 esu এবং ব্যাসার্ধ 1.4 × 10-27 মিটার (প্রায়)।
নিউট্রন : নিউট্রন হচ্ছে বিদ্যুৎ নিরপেক্ষ কণিকা। এর ভর 1.673 × 10-27 kg এবং বিদ্যুৎমাত্রা 1.4 × 10-15 মিটার (প্রায়)।

পারমাণবিক সংখ্যা কাকে বলে?

উত্তরঃ কোন মৌলের পরমাণুর নিউক্লিয়াসে বিদ্যমান প্রোটন সংখ্যার সমষ্টিকে মৌলটির পারমাণবিক সংখ্যা বলে।

যোজনী ইলেকট্রন কাকে বলে?

উত্তরঃ কোনো মৌলের পরমাণুর সর্ববহিঃস্থ স্তরে যে ইলেকট্রন বা ইলেকট্রনসমূহ রাসায়নিক বন্ধনে অংশগ্রহণ করে, সেই ইলেকট্রন বা ইলেকট্রনসমূহকে যোজনী ইলেকট্রন বলে।

একটি পরমাণুর নিউট্রন ও ইলেকট্রন সংখ্যা ১২ হলে, ভর সংখ্যা কত?

উত্তরঃ দেওয়া আছে, পরমাণুটির নিউট্রন সংখ্যা ১২ এবং প্রোটন সংখ্যা ১২।

আমরা জানি,

ভরসংখ্যা = প্রোটন সংখ্যা + নিউট্রন সংখ্যা = ১২ + ১২ = ২৪।

অর্থাৎ, পরমাণুটির ভর সংখ্যা ২৪।

ভর সংখ্যা কি?

উত্তরঃ কোন মৌলের পরমাণুর নিউক্লিয়াসে অবস্থিত প্রোটন ও নিউট্রনের সংখ্যাকে ঐ পরমাণুর ভর সংখ্যা বলা হয়। ভর সংখ্যাকে A দ্বারা প্রকাশ করা হয়। সোডিয়াম ধাতুর পরমাণুতে প্রোটন সংখ্যা ১১ টি এবং নিউট্রন সংখ্যা হল ১২ টি। তাই সোডিয়ামের ভর সংখ্যা ২৩।

পরমাণুর ভর অত্যন্ত কম হয় কেন? ব্যাখ্যা করো।

উত্তরঃ কোন বস্তুর ভর হচ্ছে ঐ বস্তুর ভেতরের কণাগুলির মোট পরিমাণ। প্রত্যেক বস্তুতে পরমাণু নামক অতি ক্ষুদ্র কণা বিদ্যমান থাকে। পরমাণু হচ্ছে মৌলিক পদার্থের ক্ষুদ্রতম কণা। এদের খালি চোখে দেখা যায় না। এমনকি শক্তিশালী মাইক্রোস্কোপেও দেখা যায় না। এদের ভেতর মোট পদার্থের পরিমাণ এতই কম যে, সবচেয়ে সূক্ষ্ম নিক্তিতে এদের ভর মাপা যায় না।  তাই বলা যায়, পরমাণুর ভর অত্যন্ত কম।

পরমাণু ও আয়নের মধ্যে ২টি পার্থক্য লিখ।

উত্তরঃ পরমাণু ও আয়নের মধ্যে ২টি পার্থক্য হলো–

i. পরমাণু তড়িৎ নিরপেক্ষ কণা অপরদিকে আয়ন ধনাত্মক বা ঋণাত্মক তড়িৎগ্রস্ত কণা।

ii. পরমাণু স্বাধীনভাবে থাকতেও পারে আবার নাও পারে কিন্তু আয়ন স্বাধীনভাবে থাকতে পারে।

পরমাণু কীভাবে আধানগ্রস্ত হয়? ব্যাখ্যা করো।

উত্তরঃ পরমাণুর নিউক্লিয়াসের ধনাত্মক প্রোটন ও কক্ষপথে ঘূর্ণায়মান ঋণাত্মক ইলেকট্রনের সংখ্যা সমান। পরমাণু সাধারণভাবে বিদ্যুৎ নিরপেক্ষ। তবে দুটি পরমাণুর মধ্যে রাসায়নিক সংযোগকালে কোনো কোনো সময় একটি পরমাণু হতে এক বা একাধিক ইলেকট্রন অপর পরমাণুতে সম্পূর্ণভাবে স্থানান্তরিত হয়। ইলেকট্রনের এরূপ স্থানান্তরের ফলে পরমাণুর মধ্যে প্রোটন ও ইলেকট্রনের সংখ্যার তারতম্য ঘটে এবং এর ফলে পরমাণু আধাগ্রস্ত হয়।

পটাসিয়ামের 19 তম ইলেকট্রনটি 3d অরবিটালে না গিয়ে 4s যায় কেন?

উত্তরঃ পটাশিয়ামের ইলেকট্রন বিন্যাস হতে দেখা যায় যে, এর 19 তম ইলেকট্রনটি 3d অরবিটালে না গিয়ে 4s অরবিটালে যায়। কারণ (n + l) নিয়ম অনুসারে 3d এর তুলনায় 4s এর মান কম হওয়ায় ইলেকট্রন আগে নিম্নশক্তির অরবিটাল 4s এ প্রবেশ করবে তারপর 3d তে যায়।

Cl এর যোজনী ও যোজ্যতা ইলেকট্রন ভিন্ন- ব্যাখ্যা করো।

উত্তরঃ Cl- এর সর্ববহিঃস্থ শক্তিস্তরে মোট ইলেকট্রন সংখ্যা 7। সুতরাং ক্লোরিনের যোজ্যতা ইলেকট্রন 7। অন্যদিকে যোজনী বলতে কোন মৌলের সর্বশেষ কক্ষপথে অষ্টক পূরণ করতে যতগুলো ইলেকট্রন বর্জন করে বা যতগুলো ইলেকট্রন গ্রহণ করে তার সংখ্যাকে বোঝায় । Cl এর সববহিঃস্থ শক্তিস্তরে 7টি ইলেকট্রন থাকায় অষ্টক পূরণ করার জন্য 1টি ইলেকট্রন দরকার। তাই Cl এর যোজনী 1। তাই Cl এর যোজনী ও যোজ্যতা ইলেকট্রন ভিন্ন।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *