প্রথম অধ্যায় : পূর্ব বাংলার আন্দোলন ও জাতীয়তাবাদের উত্থান [১৯৪৭-১৯৭০]
কত সালে যুক্তফ্রন্ট গঠিত হয়?
উত্তরঃ ১৯৫৩ সালের ৪ ডিসেম্বর যুক্তফ্রন্ট গঠিত হয়।
হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি কে?
উত্তরঃ হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
ভাষা আন্দোলন কী?
উত্তরঃ মাতৃভাষা রক্ষার জন্য যে আন্দোলন সেটাই ভাষা আন্দোলন।
মুজিবনগর সরকার কখন গঠিত হয়?
উত্তরঃ ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল মুজিবনগর সরকার গঠিত হয়।
কত সালে জাতিসংঘ ২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ঘোষণা করে?
উত্তরঃ ১৯৯৯ সালে জাতিসংঘ ২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ঘোষণা করে।
জাতীয়তাবাদ কি?
উত্তরঃ কোনো নির্দিষ্ট ভূ-খণ্ডের প্রতি জাতি, ধর্ম, বর্ণ, ভাষা ও সংস্কৃতির প্রতি ঐকমত পোষণ করাই হলো জাতীয়তাবাদ।
বাঙালি জাতীয়তাবাদ কাকে বলে?
উত্তরঃ বাংলা ভাষা, ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও বাঙালির নৃতাত্ত্বিক পরিচয়ের সমন্বয়ে যে ঐক্য গড়ে ওঠে তাকেই বাঙালি জাতীয়তাবাদ বলে। এ বাঙালি জাতীয়তাবাদই অসাম্প্রদায়িক বাংলা রাষ্ট্রগঠনে জনগণকে অনুপ্রাণিত করে। এরই ধারাবাহিকতায় নয় মাস রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত হয় স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ।
পাকিস্তানি শাসন আমলে বাঙালিদের জাতীয় মুক্তির প্রথম আন্দোলনের নাম কী ছিল?
উত্তরঃ পাকিস্তানি শাসন আমলে বাঙালিদের জাতীয় মুক্তির প্রথম আন্দোলনের নাম ছয়-দফা আন্দোলন।
ছয় দফা কর্মসূচি কাকে বলে?
উত্তরঃ ১৯৬৬ সালের ৫-৬ই ফেব্রুয়ারি লাহোরে অনুষ্ঠিত বিরোধী দলগুলোর সম্মেলনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালির অধিকার সংবলিত যে কর্মসূচি পেশ করেন, তাকে ছয় দফা কর্মসূচি বলে।
ছয়-দফাকে কেন বাঙালি জাতির মুক্তির সনদ বলা হয়?
উত্তরঃ ছয় দফায় পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সামরিকসহ সকল অধিকারের কথা তুলে ধরা হয়। এতে প্রত্যক্ষভাবে স্বাধীনতার কথা না বলা হলেও এ কর্মসূচি বাঙালির জাতীয় চেতনামনে বিস্ফোরণ ঘটায় এবং স্বাধীনতার মন্ত্রে উজ্জীবিত করে। তাই ছয় দফাকে বাঙালি জাতির মুক্তির সনদ বলা হয়।
তমদ্দুন মজলিস কি? তমদ্দুন মজলিস কত সালে প্রতিষ্ঠিত হয়?
উত্তরঃ তমদ্দুন মজলিস হলো ভাষা আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে গড়ে ওঠা একটি সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান।
১৯৪৭ সালের ২রা সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আবুল কাশেমের নেতৃত্বে তমদ্দুন মজলিস নামের একটি সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠে।
কীভাবে পূর্ববাংলা পাকিস্তানের একটি প্রদেশে পরিণত হয়?
উত্তরঃ ১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট রাতে ভারতবর্ষে ব্রিটিশ শাসনের অবসান ঘটে। জন্ম নেয় ‘ভারত’ ও ‘পাকিস্তান’ নামের দুটি স্বাধীন রাষ্ট্র। পূর্ববাংলা পাকিস্তানের একটি প্রদেশ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়। এ অংশের নাম ছিল ‘পূর্ব পাকিস্তান’।
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস কী?
উত্তরঃ ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি বিষয়ক অঙ্গ প্রতিষ্ঠান ‘ইউনেস্কো’ বাংলাদেশের ২১ ফেব্রুয়ারির শহীদ দিবসকে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করে। এই দিন পৃথিবীর ৬০০০ এর বেশি ভাষার মানুষ যেন অন্য ভাষা ও সংস্কৃতির প্রতি সম্মান জানায় সেই সুযোগ করে দেয়া হয়েছে।
কীভাবে পূর্ববাংলা পাকিস্তানের একটি প্রদেশে পরিণত হয়?
উত্তর : ধর্মীয় ভিত্তিতে ভারত ও পাকিস্তান রাষ্ট্র সৃষ্টি হয়েছিল। তৎকালীন মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ অঞ্চলসমূহ নিয়ে গঠিত হয়েছিল পাকিস্তান রাষ্ট্র। আর পূর্ববাংলাও ছিল মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ অঞ্চল। তাই পূর্ববাংলাকে পাকিস্তান রাষ্ট্রের একটি প্রদেশ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। আর এভাবেই পূর্ববাংলা পাকিস্তানের একটি প্রদেশে পরিণত হয়।
ঐতিহাসিক ৬-দফাকে পূর্ব বাংলার মুক্তির সনদ বলার কারণসমূহ চিহ্নিত কর।
উত্তরঃ ঐতিহাসিক ৬-দফাকে পূর্ব বাংলার মুক্তির সনদ বলার কারণসমূহ :
- পূর্ব বাংলার জনগণের প্রতি পাকিস্তান রাষ্ট্রের চরম বৈষম্যমূলক আচরণ ও অবহেলার বিরুদ্ধে দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রাম সুস্পষ্ট রূপ লাভ করে ৬ দফার স্বায়ত্তশাসনের দাবিনামায়।
- ছয় দফা পূর্ববাংলার জনগণের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সামরিকসহ সকল অধিকারের কথা তুলে ধরে।
- এই কর্মসূচি বাঙালির জাতীয় চেতনা —মূলে বিস্ফোরণ ঘটায়।
- এতে প্রত্যক্ষভাবে স্বাধীনতার কথা বলা না হলেও এ ছয় দফা কর্মসূচি বাঙালিদের স্বাধীনতার মন্ত্রে উজ্জীবিত করে